আপনারা একজন অপর জনের জন্য সঠিক কিনা সেটা জানতে বিবাহের আগে ১২ টি প্রশ্ন জেনে নিন ।
বিবাহ করা একটা জীবনের একটি বড় বিষয় । আপনাকে
বিবাহের আগেই নিশ্চিত হতে হবে আপনারা একজন অপরজনের জন্য সঠিক ব্যাক্তি কিনা। কেউ
যদি আপনার জন্য ১০০% নিখুঁত হয় আপনি কখনও
নিশ্চিত হয়ে সেটা বলতে পারবেন না।
আপনি কেবল বিশ্বাস করেন তাকে এবং যেখানে
সম্পর্ক আছে এবং আপনারা একসাথে থাকছেন। কিন্তু আপনাকে সত্যিই নিশ্চিত হতে হবে যে,
আপনি যার সাথে জীবন অতিবাহিত করছেন সে আসলেই
আপনার জন্য বা আপনারা একজন কি অপরজনের জন্য?
বিবাহের আগে যদি আপনি এই প্রশ্ন গুলো করেন তাহলে আপনি
অবশ্যই বুঝতে পারবেন সে কি আসলে আপনার জন্য ভালো না খারাপ।
সমাজ আশা করে মানুষকে বিয়ে করতে হবে আর সে কারণে সবাই বিয়ে করে। এমন নয়
যে সবাই বিয়েতে বিশ্বাস করে বা সারা জীবন কারো সাথে থাকতে চায় তবে সবই বিয়ে করে কারণ পরিবারের সবাই চায় সে বিয়ে করুক।
একটি
নিদিষ্ট বয়স হলে সবাই প্রশ্ন করে কেন সে বিয়ে করছেনা আর এই চাপে সে কাউকে বিয়ে করে না হলে অনেকেই করত না।
বিবাহ বিচ্ছেদ তখনি ঘটে যখন সম্পর্ক যখন দেখা যায় যে
, সে বিয়ের আগে যা
জানা দরকার ছিল সেটা
সে জানতে পারেনি । বেশির ভাগ সময় দেখা যায় যে দম্পতিরা কিছু প্রশ্নের উত্তর আত্ববিশ্বাসের
সহিত দিতে পারেনা।
বিয়ের
আগে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাস করা উচিত?
যদি আপনি বিয়ের কথা চিন্তা করে থাকেন তাহলে আপনাকে প্রথমে কিছু
প্রশ্ন জিজ্ঞাস করে নিতে হবে। এই প্রশ্ন গুলোর কারণে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি যাকে বিয়ে
করছেন বা যার
সাথে সারা জীবন অতিবাহিত করতে চান সে আসলেই আপনার জন্য উপযুক্ত কিনা।
১. কি ধরণের বাসা /বাড়ী আপনাদের
পছন্দ? প্রাই অনেক দম্পত্তির ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা তাদের স্বপ্নের
বাড়ী এবং কি করতে পছন্দ করেন সেটা আলোচনা করেন কিন্তু তারা আসলেই তাদের জন্য যেটা আদর্শ
বা বাস্তব সম্মত সেই সম্পর্কে কোন আলোচনা ই করেনা।
কি ধরণের বাসা/ বাড়ী আপনারা দুইজনেই
পছন্দ করেন? ব্যাপারটা কি এমন যে
খুব বড় বাসা অনেক খালি জায়গা অথবা খুব ছোট বাসা এবং আল্পদামি
যাতে আপনি অনেক বেশি ভ্রমন এবং দুঃসাহসিক যাত্রার
পেছনে টাকা খরচ করতে পারেন?
যদি এইরকম কিছু হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই টার সাথে আলোচনা করে নিতে হবে।
২. আপনার আয়ের কত শতাংশ আপনি বাড়ি বাড়ায় ব্যয় করতে চান। টাকা
একটা বিশাল বড় বিষয় । অনেক দম্পতি আর্থিক সমস্যার করনে বিয়ের সম্পর্কটা শেষ করে দেয়। আপনি
বাসাবাড়ির জন্য নিজ থেকে কত টাকা খরচ করতে ইচ্ছুক সেটা আগে থেকে বুঝিয়ে দেওয়াটা খুবই
গুরত্বপূর্ণ । ফলে আপনারা বুঝতে পারবেন যে আসলে আপনাদের দুইজনের চিন্তা
ধারার বিষয়টা কেমন।
৩.কে ঘরের ভিতরের আর কে
ঘরের বাইরের সৌন্দর্য বর্ধনের দ্বায়িত্ব নিবে? আপনি কি কখনও বিষয়টি আলোচনা
করেছেন? যদি আপনারা ইতোমধ্যে একসাথে বাস করছেন তাহলে আপনারা অবশ্যই বিষয়টি আলোচনা করেছেন যদি না করে থাকেন তাহলে এখনই এই
বিষয়টা নিয়ে কথা বলা শুরু করতে হবে। যদি
দেখেন দুজনের কারোই বাড়ির বাগান বা উঠানের কাজ করতে ভালো লাগেনা
তাহলে আপনাদের দুইজনকেই একসাথে আলোচনা করবেন আর নিজেরা এমন একটা বাড়ি কিনবেন যেখানে আগে থেকে অনেক
গাছপালা বা বাগান থাকবে।
৪. কি ধরনের নৈতিকতা এবং মূল্যবোধ বাচ্চাদের মধ্যে বপন করা
খুবই গুরত্বপূর্ণ? আপনি ইতোমধ্যে জানেন যে আপনি একটা ভালো বেবি চান এবং প্রত্যেকে
সেটা ই চায় কিন্তু আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে কি ধরনের মূল্যবোধ নিয়ে সে বড় হবে? কি
ধরনের নৈতিকতার বীজ আপনি কষ্ট করে বপন
করতে চান তাদের মধ্যে ?
যদি আপনারা দুজনই এই ব্যাপারে একমত না হয়ে থাকেন তবে বাচ্চা
হওয়ার পর এই বিষয়টি অনেক কঠিন এবং খারপ হবে । অতএব বিয়ের আগেই আপনাকে নিশ্চিত হতে
হবে যে এই বিষয় গুলোতে সে রাজি কিনা।
৫. কি ধরনের সঞ্চয় এবং অবসরের পরিকল্পনা আপনার? আপনাকে
টাকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হবে। বিয়ের জন্য টাকা খুবই গুরত্বপূর্ণ একটা বিষয়
যদিও আমরা কেউ এই বিষয়টি বিশ্বাস করিনা। আপনাকে অবসরের পরিকল্পনা একসাথে বিয়ের
সময়ই করতে হবে। আপনারা দুইজন কি চান যখন আপনি অবসরে যাবেন? কি ধরনের অবসর আপনি
চান এবং কিভাবে আপনারা দুইজন আপনাদের
ইচ্ছেগুল বাস্তবে পরিনত করতে পারেন? এগুলো
একটা নিদিষ্ট সীমার মধ্যে একরকম হয় বা মিলে।
৬। পাঁচ বছরের মধ্যে আপনার কর্মজীবনের পরিকল্পনা গুলো কেমন
হবে? কর্মজীবনের সঠিক পরিকল্পনা আপনাদের উভয়ের আছে কি? এখন সেগুলো সম্পর্কে কথা
বলুন এবং দেখুন সেটা উভয়ের একিই রকম কিনা। স্পষ্টতই আপনারা উভয়ই একজন অপরজনকে
উৎসাহিত এবং সমর্থন করতে চান তাছাড়া আপনাদের লখ্যগুলো একরকম কিনা সেই ব্যাপারে
নিশ্চিত হতে হবে। যদি এমন হয় যে একজন চাচ্ছেন কোন একদিন সিইও হবে অন্যদিকে অন্যজন
যে জব করছে সেটা নিয়ে খুশি আছে তাহলে এটা একটা বড় সমস্যা এবং আপনার মনে হবে যে
আপানারা একজন অপরজনের জন্য সঠিক নয়।
৭.পাঁচ বছরের মধ্যে আপনার পারিবারিক লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কি?
বিশ্বাস করুন আর না করুন অনেকেই এই লক্ষ্যগুলোর দিকে লক্ষ্য করেনা। আপনাদের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য একই রকম হওয়ার পর
কি আপনারা পারিবারিক জীবন শুরু করতে চান। আপনি পাঁচ বছরের মধ্যে সিইও হতে পারবেনা
অথচ আশা করতেছেন দুইজনে মিলে সংসার শুর করবেন।
৮. আপনাদের যৌন
জীবন কেমন?এটার ব্যাপারে নির্ভেজাল থাকুন।
আপনারা উভয়ই কি যৌন জীবন নিয়ে খুশী এবং সন্তস্ট।যদি আপনার সেক্সের সমস্যা থাকে
তাহলে আপনার বিয়ে না করা ই উচিত। একটা ভালো সম্পর্ক গড়তে শারীরিক সম্পর্কটা খুবই
গুরত্বপূর্ণ একটা কাজ যদি আপনি সেটা না করতে পারেন তাহলে বিয়েটা আপনার জন্য নয়।
৯. ভবিষ্যতে শিহরন ধরে রাখার জন্য আপনারা কি কোন পরিকল্পনা
করে রেখেছেন? যৌন আগ্রহ ও রোমান্স হারিয়ে ফেলার জন্য অনেকেই বিবাহকে দায়ী করে
।কিন্তু ব্যাপার টা এমন নয় প্রকৃতপক্ষে পরিবার ঘটন ও বাচ্চাদের দিকে মনোযোগের কারন
টাই বাধা হতে পারে।কিন্তু এটা ধরে রাখাটা
খুবই খুবই গুরত্বপূর্ণ । অন্তরঙ্গতা ধরে
উপায়টা আপনাদের দুইজনকে খুজে বের করতে হবে। আপনাদের পরিকল্পনা এবং কি করতে চান সেটা সরাসরি
আলোচনা করেন তাহলে দেখবেন ভবিষ্যতে আপনাদের সম্পর্ক অনেক অন্তরঙ্গ থাকবে এবং
আপনারা কখনও কেউ কারো প্রতি বিরক্ত হবেন না , আপনাদের সম্পর্ক সারাজীবন সতেজ থাকবে
ইনশা আল্লাহ।
১০. কি ধরনের জীবনযাপন আপনি করতে
চান? আপনি জীবনযাপনে সব সময় সুস্থ থাকার
জন্য স্বাথ্যকর খাবার খেতে কেতে চান অন্য দিকে আপনি যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন সে যখন
যা ইচ্ছে তা ই খাবে তার মানে তারকাছে খাবারের বিষয়টা স্বাভাবিক। এই
বিষয়টা পরে একটা বড় সমস্যা সৃষ্টি করবে আপনাদের জন্য।
১১। আপনি তাদের জীবনযাত্রা নিয়ে
যুক্তি বা উপদেশ দিতে পারবেন কিন্তু
আপনাকে জানতে হবে তারা কোন ধরনের জীবন যাত্রা পছন্দ করে কি
তাদের লক্ষ্য? তার কি সেটার উন্নতি করতে চায় এবং সুখী জীবনযাপন করতে চায় অথবা তারা
কি এই সবের বা পুষ্টিকর খাবারের তোয়াক্কা ই করেন না ?যদি ব্যাপারটি তাই হয় তাহলে
বিয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি বিরাট প্রাথক্য তৈরি করবে যেটা আপনাদের কারো জন্য ই
ভালো হবেনা।
বিবাহ যে একটা বড় বিষয় এবং এটা আপনাকে সে ভাবে ই মুল্যায়ন করতে হবে।
বিয়ের আগেই সঠিক প্রশ্নগুলো জানতে পারলে আপনি জীবনে ভুল সিদ্বান্ত নেওয়া থেকে
রক্ষা পাবেন। আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে, আপনি আসলেই সঠিক মানুষের সাথে সারাজীবনের জন্য আবদ্ধ হতে
যাচ্ছেন।
No Comment to " আপনারা একজন অপর জনের জন্য সঠিক কিনা সেটা জানতে বিবাহের আগে ১২ টি প্রশ্ন জেনে নিন । "